এই বয়সে তার সুন্দর জামাকাপড় পরে ব্যাগ কাঁধে স্কুলে থাকার কথা ! কিন্তু তা না হয়ে বেঁচে থাকার জন্য, একমুঠো খাবারের জন্য কোমল হাতে ইট বহন করছে বা ভাঙ্গছে! বস্তুবাদি নিষ্ঠুর পৃথিবী তাকে ঠেলে দিয়েছে এই নিষ্ঠুর জীবনের দিকে! এমনও হতে পারে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সে হেরে গিয়ে অকালেই মৃত্যুমুখে পতিত হবে! কোনোরকম বেঁচে থাকলেও একদিন সে হয়ে উঠবে রোবট হিসেবে!
তার কাছে জীবনের অর্থ হবে অত্যন্ত কষ্টের বিষয়, বেঁচে থাকা মানে জীবনের সাথে যুদ্ধ করা। তারপর দুইদিনের জীবনের শেষ! যা বস্তুবাদী পৃথিবীতে মানুষ শিখছে! জীবনের অর্থ যে ব্যাপক ও বিশাল! এক একটা জীবন যে এক একটা বিরাট দর্শন! মানুষের জীবনের যে স্বাধীনতা রয়েছে ! বেঁচে থাকার অধিকারের পাশাপাশি যে হাজারো অধিকার রয়েছে! জীবনের যে চারটি ধাপ রয়েছে! কেন সে পৃথিবীতে এসেছে মানুষ হিসেবে, কেন আল্লাহ্পাক তাকে মানুষ বানিয়েছে, অন্য প্রাণী নয়! মানুষ ও মানবতার মূল সংজ্ঞা কি? সবই হয়তঃ তার কাছে অজানা রয়ে যাবে ! পৃথিবীব্যাপী এইরকম দুঃস্থ শিশুর সংখ্যা কম হলেও এখন ছয় কোটি !
সিরিয়ার যুদ্ধ, ফিলিস্তিনে ইসরাইলী আগ্রাসন, ইয়েমেনে ওহাবি-সালাফিদের বোমা হামলা, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন এর সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশি করে তুলেছে! ইউনেস্কোসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে! কিন্তু রেকর্ড অনুযায়ী এইসব সাহায্য (আফ্রিকার কয়েকটা দেশ ব্যাতিত) এইসব দুস্থ শিশুদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছায়নি ! তার কারণ একটাই ! সাহায্য যেসব অমানুষগুলোর মাধ্যমে বন্টন হয় তারাই তা গলদঃকরণ করে ফেলে ! দুঃস্থরা তালিকাতে থাকে কিন্তু সাহায্য পায় না!
লেখক: এইচ এম ইকবাল চিশতী
আজকে পৃথিবীকে সুসমবন্টনের জন্য আমাদের প্রয়োজন কাঠামোগত পরিবর্তন। মানুষের মধ্যে বৈশিষ্টগত পরিবর্তন ও মানুষের মধ্যে মানবতাবোধ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি বিষয়! এই ইস্পাতকঠিন বস্তুবাদী সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার যতদিন না পরিবর্তন আসবে, যতদিন মানুষ মুলকিয়াতের অধীনে কারাবন্ধী থাকবে ততদিন শুধু তাদের নয় কারোরই মুক্তি আসবে না।
তাই আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তির প্রয়োজন, আর সেজন্য প্রয়োজন ইনসানিয়াতের বা মানবতার রাজনীতির। যার মধ্যে শুধু ইহকাল নয় পরকালেরও সাফল্য নিহিত, কারণ এই রাজনীতি মহান রিসালাতের আলোকধারা থেকে এসেছে। মহান আল্লাহ্পাক আমাদের প্রিয়নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সর্বজগতের রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন। তিনি শুধু মানুষের জন্য রহমত স্বরূপ নন, প্রাণীকুলের জন্যও রহমত স্বরূপ। তিনি অন্য সকল নবীরাসূলগনের এমনকি জিনদেরও নবী। প্রিয়নবীজির রহমতের ধারা বিশ্বব্যাপী প্রবাহমান রাখতে আল্লাহ্পাক যুগে যুগে মহান আউলিয়া ও ইমামগণকে প্রেরণ করেছেন।
বর্তমানে এই রহমতের ধারাকে বিশ্ব সুন্নি আন্দোলন তথা ইনসানিয়াত বিপ্লবের মাধ্যমে সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেবার জন্য মহান আল্লাহ যাকে মনোনীত করেছেন, তিনিই হুজুর আল্লামা ইমাম হায়াত আলাইহে রাহমা। তিনি পবিত্র কালিমার প্রতিষ্ঠান। এই মহান ইমামের মুখনিঃসৃত প্রতিটি বানী-ই উনার পরিচয় ফুটিয়ে তোলে যে আসলে উনি যে এই যুগের ইমাম। কারণ সাধারণ মানুষের পক্ষে তা কখনও সম্ভব নহে।
আল্লাহ আমাদেরকে হুযুরের ছায়ায় রেখে তাঁর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রহমত নিয়ামতের বাণীকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেবার তাওফিক দিন। আর সাথে সাথে অন্ধদের চোখ খুলে দিন, যাতে হুজুরকে চিনতে পারে। এতিম দুঃস্থ শিশুদের জীবনকে সহজ করে দিন, আমীন ইয়া রাব্বুল আলামিন।
সবাইকে সালাম ও মোবারকবাদ।
এইচ এম ইকবাল চিশতী
(ফ্রান্স)