২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

ফেনীর দাগনভূঞা থানার ওসি ছালেহ পাঠানের সফলতা

এ কে আজাদ, ফেনী:
ফেনীর দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. ছালেহ আহম্মদ পাঠান থানায় যোগদান করে পাঁচ মাসেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে দাগনভূঞা উপজেলা প্রায় মাদকমুক্ত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় তার ভূমিকা সব শ্রেণীর মানুষের কাছে এখন প্রশংসিত। এছাড়া নানামুখি কার্যক্রম, থানার স্টাফদের সাথে ভোরের আলো আসার আগেই বেড়িয়ে পড়েন আসামি গ্রেফতার অভিযানে। এতে তিনি বেশ সুনাম-সুখ্যাতিও কুড়িয়েছেন। উপজেলার সর্বত্র হাট-বাজারে চুরি-ডাকাতি, ইভটিজিং এবং কিশোর-যুবকদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ওসি পাঠান বেশ কিছু সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত এখন প্রায় মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত উপজেলায় রুপান্তরিত হওয়ার ধারপ্রান্তে। মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যোগদানের শুরু থেকেই তার সংগ্রাম চলছে। অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে দাগনভূঞা থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত।

জানা যায়, দাগনভূঞা থানায় ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে যোগদানের পর থেকে তার চৌকস অফিসারদের নিয়ে রাত দিন কঠোর পরিশ্রম করে, নিজের সাহসী পদক্ষেপ আর কোলাকৌশলে উপজেলায় মাদকপাচার, জাল টাকা ব্যবসায়ী, অস্ত্র ব্যবসায়ী , চোর, ডাকাত, সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বিঘœকারীকে গ্রেফতারে বিশেষ অবদান রেখেছেন। যার ফলে স্থানীয় থানা ও পুলিশ বিভাগের প্রতি দাগনভূঞা থানা জনগনের স্বস্তি আসা ও বিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ক্রমশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে বলে জনগনের দাবী। তাছাড়া, একাধিক ভূমিদূস্যতা, দখল-বেদখল, মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি সহ আইনশৃংখলা পরিপন্থী কার্যক্রম রাখায়, পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি। ঘুষ দুর্নীতি এমনকি দাগনভূঞা থানা এলাকার এক শ্রেণির দালাল চক্রের প্রভাবকে গুড়িয়ে দিয়ে সাধারন জনগনের আস্থা ফিরিয়ে আনেন। এসবই মাত্র পাঁচ মাসে অর্জন করতে পেরেছেন নিজের সততা আর কর্ম স্পৃহার গুনে, পুলিশ জনগণের বন্ধু, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব বিশেষত্ব পুলিশের। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, যোগদানের পর থেকে এই পর্যন্ত পাঁচ মাসে বিভিন্ন আইনে ৪৯টি মামলা রুজু হয়েছে। অভিযান চালিয়ে ৩০৬০ পিস ইয়াবা উদ্ধার, ১৩ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার, একটি এলজি উদ্ধার, ১৩৮ কেজি ৩৫০ গ্রাম গাঁজা, ৩০ লি. চোলাইমদ উদ্ধার, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হাতকাটা কবির, মাছ সুজন, মুরগী মিলনসহ আরো ৩০ জন, সাজাপ্রাপ্ত মামলার আসামি ১৩জন, নারী শিশু ৩টি মামলার ৫ জন আসামির মধ্যে ৪জন গ্রেফতারসহ অসংখ্য ছিনতাইতারী, চোর গ্রেফতার অভিযান প্রতিদিন অব্যাহত রেখেছেন । দাগনভূঞাবাসীর অনেকেই বলছেন, ছালেহ আহম্মদ পাঠান যোগদান করার পর চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে সুপরিচিত হয়েছেন। অতি অল্প সময়ে দাগনভূঞার ক্রাইম দমনে তার ভূমিকা সর্বমহলে বেশ আলোচিত। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বাল্যবিবাহ, মাদক ও তথ্য- প্রযুক্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রায়ই তাকে সচেতনমূলক আলোচনা সভা করতে দেখা গেছে। উপজেলা রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা তাকে নি:স্বার্থ সহায়তা করায় অদ্যবধি বড় ধরনের কোন রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা মামলার ঘটনা ঘটেনি। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগে দাগনভূঞা থানায় যোগদান করেন। এ অল্প সময়ে আইনশৃঙ্খলার কোন অবনতি ঘটেনি, বরং সুনামের সাথে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।

স্থানীয় জনগণ জানান, বিগত অনেক বছরের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ ভালো রয়েছে। আগের তুলনায় মাদক ও সন্ত্রাস অনেকটা নিমূল হয়েছে। ওসি ছালেহ আহম্মদ পাঠান যোগদান করার পর থেকে গ্রামাঞ্চলের মানুষ চুরি-ডাকাতির ভয় ছেড়ে খুব স্বস্তিতে আছে। তারা বলেন, ওসি’র কঠোর অবস্থানের কারনে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও রাঘববোয়াল চাঁদাবাজরা, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় সুশীল সমাজের ধারনা মতে সম্প্রতি সময়ে বিভিন্ন উপজেলার তুলনায় দাগনভূঞার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি সিথিল রয়েছে। জানা গেছে, ছালেহ আহম্মদ পাঠান তার কর্মজীবনে একজন সফল ওসি। তিনি দাগনভূঞা থানায় যোগদানের পর থেকে নিজ যোগ্যতা আর দক্ষতার বলে উপজেলার সচেতন ও সাধারণ এলাকাবাসীর মন জয় করেছেন। সেই সাথে একজন সফল ওসি হিসেবে যত গুণাবলী প্রয়োজন তা তিনি দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। দাগনভূঞা থানায় যোগদানের পর থেকে থানা এলাকা থেকে টাউট-বাটপার ও দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ হয়েছে। পুলিশী সেবা গ্রহীতাদের এখন আর দূর্ভোগ পোহাতে হয় না। মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানেও সফল হয়েছেন । ধনী-গরীব সবার জন্য ওসির দরজা সব সময় উন্মোক্ত করেছেন তিনি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইসহ সকল অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভমিকা পালন করছেন । ওসি ছালেহ আহম্মদ পাঠান বলেন, মানুষের সেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। ওসি হিসেবে যতদিন কর্মরত আছি, ততদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিরলস ভাবে আমার দায়িত্ব পালন করবো। যাতে করে মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে ও স্বস্তিতে থাকতে পারেন। তিনি বলেন, আমি মানবতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে সকল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। কেউ যদি কোথাও সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই করে আর সে ঘটনা যদি পুলিশকে জানানো হয় তাহলে তথ্য দাতার পরিচয় গোপন রেখে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, অপরাধ দমনের পাশাপাশি উপজেলাকে মাদক মুক্ত করার প্রত্যয়ে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মাদকের সাথে জড়িতদের সমাজ থেকে নির্মূল করা হবে। মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ছাড় পাবে না সন্ত্রাসীরাও। সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশী অভিযান অব্যহত থাকবে। তিনি অপরাধ দমনে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান। এসময় তিনি বাংলাদেশ পুলিশের পোশাক পরিহীত কারো সাথে কেউ যদি ব্যবহার খারাপ করে সে যত বড় শক্তিশালী হউক না কেন উচিৎ জবাব দেওয়া হবে। আমার অধিনস্থ কোন অফিসার বা সদস্য কোন অপকর্ম করছে বলে প্রমানিত হলে আমাকে জানালে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, আমরা পুলিশ বাহিনী তা বৃথা যেতে দিবো না। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গি বাদ উৎখাত করতে যে কাজ করছেন, বাংলাদেশ পুলিশ তার সহযোগী হিসেবে সবসময় পাশে আছে।

(Visited ২৮৪ times, ১ visits today)

আরও পড়ুন

হযরত খাজাবাবা (রঃ) ও জামে আওলিয়া কেরামের পথ পূণরুদ্ধার সম্মেলন অনুষ্ঠিত
মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবসে ফেনীতে র‍্যালী
মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্টের সমাবেশ
মহররম ঈমানী শোক ও ঈমানী শপথের মাস, আনন্দ উদযাপনের নয় – আল্লামা ইমাম হায়াত
অসহায় মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করল ‘জীবন আলো’
করোনায় সারাদেশে আরও ৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৯৯৮
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পেপসির সঙ্গে বিষ খাইয়ে খুন, যুবকের যাবজ্জীবন