৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

নুসরাতকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিল- শাহাদাত

বিশেষ প্রতিনিধি:

ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল
মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যার জবানবন্দী দিয়েছেন অন্যতম প্রধান আসামি শাহাদাত। শাহাদাতের জবানবন্দিতে নুসরাত হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা উঠে এসেছে।

শাহাদাত জবানবন্দিতে বলে, ৪ এপ্রিল রাতে নুসরাতকে হত্যার বিষয়ে গোপন বৈঠক হয়। শাহাদাত ছাড়া ওই বৈঠকে আরো ছিলো নুর উদ্দিন, হাফেজ আবদুল কাদের, জাবেদ, জোবায়ের, মহিউদ্দিন শাকিল, শামীম (২), ইমরান, ইফতেখার হোসেন রানা ও শরীফ। হত্যা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন শাহাদাত, নুর উদ্দিন ও কাদের। মাস দেড়েক আগে নুসরাত প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হন শাহাদাত। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, ৫ এপ্রিল আরবি ১ম পত্র পরীক্ষার দিন নুসরাতকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হবে। থানাপুলিশের বিষয়টি মাকসুদ (ওয়ার্ড কাউন্সিলর) এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমিন দেখবেন। সিদ্ধান্ত হয় যে শাহাদাত, জোবায়ের, জাবেদ, ও মণি সাইক্লোন শেল্টারের (তৃতীয় তলা ভবন) ছাদে থাকবেন। বাড়ি থেকে মণি তিনটি বোরকা নিয়ে আসবেন। শাহাদাত কেরোসিন নিয়ে আসবেন। আর নুসরাতকে কৌশলে ডেকে আনবেন উম্মে সুলতানা পপি। আফসার ‘স্যার’ গেটে অবস্থান নেবেন, গেটের বাইরে অবস্থান নেবেন নুর উদ্দিন, হাফেজ কাদের, ইমরান হোসেন মামুন ওরফে ইমরান, ইফতেখার হোসেন ওরফে রানা, মো. হোসেন ওরফে শরীফ। সাইক্লোন শেল্টারের নিচে পাহারায় থাকবেন মহিউদ্দিন শাকিল ও মো. শামীম (২)।

জবানবন্দিতে শামীম বলেন, ‘বিষয়টি মাকসুদ কাউন্সিলর, আফসার স্যার, সেলিম স্যার, হুজুরের (অধ্যক্ষ) দুই ছেলে নিসু ও আদনান, মণি এবং পপিকে জানানোর দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর এবং সেই দায়িত্ব পালন করি। আমরা তখন তৃতীয় তলার একটি কক্ষে ছিলাম। নুসরাতকে নিয়ে পপি ছাদে উঠলে আমরা চারজন দ্রুত তাঁর কাছে চলে যাই। এরপর মণি ও পপি ধরে ফেলে নুসরাতকে। তখন আমি নুসরাতের মুখ চেপে ধরি। জোবায়ের নুসরাতের ওড়না ছিঁড়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। আমরা নুসরাতকে ছাদে শুইয়ে ফেলি। আমি নুসরাতের মুখ চেপে মাথা ধরে রাখি। মণি তাঁর বুক ধরে রাখে। পপি পা ধরে রাখে। এ সময় পপি পরিকল্পনামতো শম্পা বলে ডাক দেন। আসলে পপির ছদ্মনাম শম্পা। আর জাবেদ পলিব্যাগে থাকা কেরোসিন নুসরাতের পা থেকে বুক পর্যন্ত ঢেলে দেয়। জোবায়ের ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়। এতে সময় লাগে প্রায় পাঁচ মিনিট। ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন দিলে তা দ্রুত গায়ে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আমি, জাবেদ ও জোবায়ের বোরকা খুলে ফেলি। আমি প্রস্রাবখানার পাশ দিয়ে বের হয়ে যাই। জাবেদ মাদ্রাসার হোস্টেলে ঢুকে যায়। মণি ও পপি ওরফে শম্পা পরীক্ষার হলে ঢুকে যায়। কারণ, তাঁরা দুজনই নুসরাতের মতো আলিম পরীক্ষার্থী ছিল।

জবানবন্দিতে শামীম বলেন, ঘটনার পর তিনি রুহুল আমিনকে জানান এবং ময়মনসিংহে পালিয়ে যান। পরে মুক্তাগাছায় গ্রেফতার হয়। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রুহুল আমিন বলেন, তিনি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। মাদরাসার বিষয়ে অনেকের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠার পর তিনি তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন বলে দাবি করেন।

পিবিআইয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা হলে একজন ব্যাংকার অধ্যক্ষের পক্ষে আন্দোলন করতে টাকার জোগান দেন। এ ছাড়া পরিকল্পনার কথা অধ্যক্ষের দুই ছেলেও জানতো।

(Visited ২৩ times, ১ visits today)

আরও পড়ুন

বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল আলিম এর সহধর্মীনি নুরজাহান বেগম আর নেই
ফজলে রাব্বীর আসনে নৌকার হাল ধরতে চান যারা
মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবসে ফেনীতে র‍্যালী
মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্টের সমাবেশ
মহররম ঈমানী শোক ও ঈমানী শপথের মাস, আনন্দ উদযাপনের নয় – আল্লামা ইমাম হায়াত
এমপির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কিল-ঘুষির অভিযোগ
বঙ্গবন্ধুর সমাধীস্থলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের শ্রদ্ধাঞ্জলী
অসহায় মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করল ‘জীবন আলো’