অনলাইন ডেস্ক:
সপ্তাহ তিনেক আগে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা বাতিলের পর সেখানকার পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছে। এর পর কাশ্মীরে ৫০ হাজার কর্মসংস্থান তৈরির ঘোষণাও দিয়েছেন ভারতীয় ওই কর্মকর্তা। হিমালয় উপত্যকাটিতে বর্তমানে কঠিন অচলাবস্থা চলছে। কাশ্মীরে সরাসরি ভারতীয় শাসন আরোপ করার কয়েক ঘণ্টা আগ থেকেই রাজ্যটিকে অচল করে দেয় মোদি সরকার।
সান্ধ্য আইন, মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করার পাশাপাশি ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মুসলমান অধ্যুষিত রাজ্যটিতে আগে থেকেই পাঁচ লাখ সেনা মোতায়েন ছিল। স্বায়ত্তশাসন বাতিলের আগে সেখানে আরও কয়েক হাজার সেনা নতুন করে মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারতীয় শাসন থেকে মুক্তি পেতে ১৯৮৯ সাল থেকে কাশ্মীরে সশস্ত্র বিদ্রোহ চলছে। নতুন সেনা মোতায়েনের পর সেখানে আতঙ্ক ও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। মূল শহর শ্রীনগরে অব্যাহত বিক্ষোভ চলছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও ছররা গুলি ব্যবহার করেছে। সরকারি সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে কাশ্মীরে পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভ ও পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০০ বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৩০০ পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর ১০০ জওয়ান আহত হয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, অচলাবস্থা কার্যকর হওয়ার আগের সময়ের চেয়ে এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কয়েক গুণ বেশি। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও সরকার বিরোধিতাও ক্রমাগত বেড়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি শান্ত করতে সবসময় চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এখন কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যেও উত্তেজনা বাড়ছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের গভর্নর সত্য পাল মালিক বুধবার বলেন, প্রতিটি কাশ্মীরির জীবন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই অচলাবস্থা জরুরি। এখানে বেসামরিক লোকজন হতাহত হচ্ছে না। তবে সহিংস হওয়া অল্প কয়েকজন আহত হয়েছেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় নিহত তিন ব্যক্তির স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছে এএফপি। টিয়ার গ্যাসে এক নারী ও এক পুরুষ নিহত হয়েছেন। আর এক কিশোর পুলিশের ধাওয়ায় নদীতে ডুবে মারা গেছে।
মালিক বলেন, স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাশ্মীরের চেহারা বদলে যাবে। এতে এ অঞ্চলে বাস করেন না এমন লোকও সেখানে জমি কিনতে পারবেন।
কাশ্মীরের ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয় সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ৫০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, কাশ্মীরে দখলদারদের ঢল নামবে।
শ্রীনগরে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে অস্বীকার করছেন স্থানীয়রা। কাশ্মীরে অন্তত চার হাজার লোক গ্রেফতার হয়েছেন। যদিও কিছু লোককে তাৎক্ষণিক ছেড়ে দেয়া হয়েছে।