২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

ঠাকুরগাঁওয়ে বিলুপ্তির পথে দেশী মাছ

মাসুদ রানা পলক, ঠাকুরগাঁওঃ

ঠাকুরগাঁও জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় সবগুলো নদী, খাল, বিল ও ডোবা-জলাশয় থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার পর মাছের ভরা মৌসুমেও নদী,খাল-বিল গুলো মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে।

কৃষিজমিতে অনিয়ন্ত্রিত সার ও কীটনাশকের ব্যবহার , অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে ডিম ওয়ালা মা মাছ ও ছোট পোনা মাছ ধরা, খাল-বিল-ডোবা ভরাট, উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ নির্মাণসহ মাছের বিচরণক্ষেত্রের অনুকূল পরিবেশ সংকট হওয়ার কারণে দিনকে দিন দেশীয় প্রজাতির মাছ গুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে । একসময় জেলার বিল সহ ছোট বড় অনেক খাল বিলে প্রচুর পরিমানে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত।
এসব নদী, খাল, বিল ও জলাশয়ের মাছে  এলাকার মানুষের চাহিদা পুরণ হয়ে যেতো।কিন্তু এখন বেশ কিছু দেশি প্রজাতির মাছ তেমন দেখা যায় না।

দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্তির কারণে স্থানীয় জেলেদের দুর্দিন যাচ্ছে। জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে মা মাছগুলো ডিম ছাড়ে। ওই সময় কিছু  শ্রেণির অসাধু মৎস্য শিকারি কারেন্ট জাল ও ভারতীয় এক প্রকার টানা জাল দিয়ে মা মাছ ও পোনা মাছ গুলো ধরে ফেলে। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন হয় না। একসময় জেলার গ্রামগঞ্জের হাটবাজার গুলোতে নানা ধরনের দেশি মাছের সমারোহ চোখে পড়ত। দেশীয়  মাছের মধ্যে রয়েছে— কৈ, মাগুর, শিং, পবদা, টেংরা, পুঁটি, ডেরকা, শৌল, বোয়াল, আইড়, ভ্যাদা, বাইম, খলিশা, ফলি, চিংড়ি, টাকি, চিতল, বালিয়া, চান্দাসহ নাম না-জানা বহু প্রজাতির দেশীয় মাছ।

সদর উপজেলার  রহিমানপুর ইউনিয়নের বিশ্বাসপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস আলী (৬৫) বলেন- একসময় খাল বিলে প্রচুর দেশী মাছ দেখা যেত। আমাদের মাছ ধরার সময় জালে ছোট পোনা মাছ উঠলে ধরতাম না আমরা পানিতে ছেড়ে দিতাম অথচ এখন সেই দেশীয় ছোট মাছগুলো ৩ থেকে ৫শ  টাকা কেজিতে কিনতে হয়। এ ছাড়া বাজারে যে মাছই কিনতে যাই সবই চাষ করা। চাষের এই মাছের মধ্যে প্রাকৃতিক মাছের স্বাদ মেলে না। তাই এখনেই সময় সেই স্বাদের বিলুপ্তপ্রায় মাছগুলো রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড.মোঃ সাইনার আলম জানান, শুষ্ক মৌসুমে জেলার বিল জলাশয় গুলো শুকিয়ে যাওয়ায় দেশি প্রজাতির মা মাছ হুমকীর মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় একাধিক জায়গায় মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন করা সম্ভব হলে শুষ্ক মৌসুমে মা মাছ সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবে। সেই সাথে গণসচেতনতা তৈরি করে কৃষিজমিতে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ও কারেন্ট জালের ব্যবহার রোধ এবং মৎস্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা গেলে বিপন্ন প্রজাতির এসব মাছ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে ।

(Visited ৬৬২ times, ১ visits today)

আরও পড়ুন

বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল আলিম এর সহধর্মীনি নুরজাহান বেগম আর নেই
ফজলে রাব্বীর আসনে নৌকার হাল ধরতে চান যারা
মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবসে ফেনীতে র‍্যালী
মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্টের সমাবেশ
মহররম ঈমানী শোক ও ঈমানী শপথের মাস, আনন্দ উদযাপনের নয় – আল্লামা ইমাম হায়াত
এমপির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কিল-ঘুষির অভিযোগ
বঙ্গবন্ধুর সমাধীস্থলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের শ্রদ্ধাঞ্জলী
অসহায় মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করল ‘জীবন আলো’