মো. সাইফ উদ্দিন মিঠু:
দুই হাত ছাড়া জন্মগ্রহণ করলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আটকাতে পারেনি মোনায়েম কে। ফেনীর দাগনভূঞা একাডেমীর তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আবদুল্লাহ আল মোনায়েম। তার ইচ্ছা শক্তি দিয়ে ক্লাসের মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে, অর্জন করেছে একের পর এক পুরস্কার। জানা যায়, দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের এনায়েতনগর গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে মোনায়েমের জন্মের পর দুই হাত না থাকায় মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের মন খারাপ হয়। বাড়তি পরিশ্রম করে আদর স্নেহ দিয়ে বড় করে তুলেন তার মা বিবি কুলসুম । ৬ বছর বয়সে ভর্তি করান স্কুলে। এর পর থেকেই সে ভালো ফলাফল করতে থাকে। পা দিয়ে প্রতিদিনের পড়া খাতায় নোট করে। দুই ভাইয়ের মধ্যে মোনায়েম বড়। অন্য সবার মত তার সহপাঠী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাকে আদর করেন। পড়ালেখার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গণে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সে। চিত্রাংকণে আগ্রহ দেখে তার মা তাকে উজ্জীবক আর্ট স্কুলে ভর্তি করায়। জেলা ও উপজেলায় সেরা পুরস্কার লাভ করে জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে সে।
শিশু মোনায়েম জানায়, এমন সাফল্যে খুশি তার পরিবার। বড় হয়ে সে ইঞ্জিনিয়ার হবে এমন স্বপ্ন সবসময় মনে লালন করছে। মোনায়েমের মা বিবি কুলসুম জানান, সে ৭ই মার্চ ও ২৬শে মার্চ উপলক্ষে চিত্রাংকন প্রতিযোগীতায় জেলায় ২য় হয়েছে, মাতৃভাষা দিবস ও বিজয় দিবসে উপজেলায় ২য় হয়েছে , স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত পুষ্টি সপ্তাহে জেলায় ২য় হয়। তার সফলতায় সকলের দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করেন।
উজ্জীবক আর্ট স্কুলের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন বলেন, শিশু মোনায়েমকে পা দিয়ে চিত্রাংকনের প্রশিক্ষণ প্রদান করি। তার ইচ্ছা শক্তি তাকে আরো অনেকদূর নিয়ে যাবে আমি আশা করি। দাগনভূঞা একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ায় শিক্ষকরা তাকে সবসময় সহযোগিতা করেন।
দাগনভূঞা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখারুল আলম বলেন, তাকে দেখে অন্যরাও মনে স্বপ্ন বুনন করে সফল হবে বলে আমি মনে করি। মানুষের ইচ্ছা শক্তি যে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারে তার উদাহরণ মোনায়েম।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম ভূঞা বলেন, শারিরীক প্রতিবন্ধকতা জয় করে উচ্চতর পড়া শেষ করে কর্মক্ষেত্রে সফল হবে এমন প্রত্যাশা করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোন বাধা নয়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মোনায়েম।