ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার এক গৃহবধু তার চাচা শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে। মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের চিলারং গ্রামের বাসিন্দা ওই গৃহবধু ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন অভিযোগ দেন ৷ তারা আরও অভিযোগ করেন, ধর্ষক ও তার লোকজন মামলা না করতে গত ২০ দিন ধরে হুমকি দিয়ে আসছে।
পরে দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধু স্বজনসহ থানায় এসেছে। মামলা করার ‘প্রক্রিয়া চলছে।’ আগে ওসি জানিয়েছিলেন, ধর্ষণের কোন খবর পাননি। অভিযোগ পেলে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম (৫২) চিলারং গ্রামের কালুয়া মুন্সির ছেলে এবং তিনি সম্পর্কে ওই গৃহবধুর চাচা শ্বশুর। এছাড়াও অন্য অভিযুক্তরা হলেন সাইফুলের ভাতিজা রমজান আলীর ছেলে আল আমিন (২৪), ফিরোজ (২৩) ও মিলন (২৪)।
এক সন্তানের মা ওই গৃহবধু ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, “গত ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে গরুর জন্য বাড়ির পাশের মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিলাম। পাশেই আখক্ষেতে আগে থেকে ওৎ পেতে ছিলেন চাচা শ্বশুর সাইফুল ইসলাম।
হঠাৎ পেছন দিক থেকে এসে তার মুখ চেপে ধরে জোর করে আখক্ষেতে নিয়ে ‘জোরপূর্বক ধর্ষণ’ করেন’। বিষয়টি প্রকাশ না করার জন্য ‘ধর্ষক’ শ্বশুর হুমকি দেয় বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, তবে ধর্ষণের ঘটনা সাইফুলের ভাতিজা আল আমিন দেখে ফেলে। পরদিন রাত ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে অসংখ্যবার যোগাযোগ করেন আল আমিন।
“সে আমাকে বাড়ির পাশে দেখা করতে বলে; আমি ফোন রিসিভ করে দেখা করতে রাজি হয়নি। পরে সে আমাকে ম্যাসেজ দিয়ে হুমকি দেয় দেখা না করলে সবাইকে বিষয়টি জানাবে। ভয়ে বাড়ির পাশে গ্রামীণ ফোনের টাওয়ার ওখানে দেখা করতে যাই তার সাথে।
“এ সময় আল আমীন ও তার বন্ধু ফিরোজ ও মিলন জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণ করে।” তারপর গৃহবধু পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানানোর পর থেকে সাইফুল, আল আমিন, তার বন্ধু ফিরোজ ও মিলন গৃহবধুসহ তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে মামলা না করতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন।
ওই গৃহবধুর শ্বশুর বলেন, “এ ঘটনায় মামলা করতে চাইলে সাইফুল, আল আমিন ও তার লোকজন আমাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
গৃহবধুর দিনমজুর স্বামী ধর্ষকদের ‘কঠিন শাস্তি’ দাবি করেন। চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, এসব অপরাধীদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। আমি তাদেরকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
তবে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছে।” অন্য অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।