কিস্তি না পেয়ে ঋণগ্রহীতার ১২৫ বস্তা ধান, পালিত শুকর ও ছাগল নিয়ে গেছে ঋনদাতা সমিতির লোকজন। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের অর্ধেন্দু রায় এ ঘটনার শিকার হয়েছেন। এমন কাজ করেছে স্থানীয় নবরূপ সমবায় সমিতি ও পূর্বাশা সমবায় সমিতির লোকজন।
অর্ধেন্দু রায় অভিযোগ করেছেন, এ ব্যাপারে কারো কাছে নালিশ দিলে বা আইনি ব্যবস্থা নিলে এলাকাছাড়া করবে বলে হুমকি দিয়েছে সমিতির লোকেরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নবরূপ সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ পিন্টু কবিরাজ বলেন, অর্ধেন্দুর কাছে সুদ ও আসলসহ অনেক টাকা পাওনা রয়েছে। তিনি টাকা না দিয়ে পালিয়ে যেতে পারেন। এ কারণে সমিতি যে টাকা পাবে সে অনুযায়ী ধান ও শুকর আনা হয়েছে। অর্ধেন্দুর জন্য শুকরের এক কেজি মাংস রেখে দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ডুমুরিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. সেলিম আক্তার নবরূপ সমিতির এমন আচরণের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তারা সরকারের নির্দেশ অমান্য করেছেন। তাদের এই ভূমিকাটি সম্পদ লুট করার সামিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধেন্দু রায়কে সমিতির লোকদের আইনের আওতায় আনতে সবরকমের সহায়তা দেয়া হবে।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী অর্ধেন্দু রায় পাইকগাছা উপজেলার গজালিয়া গ্রাম থেকে জীবিকার তাগিদে ডুমুরিয়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বিলে জমি বর্গা নিয়ে মাছ ও ধান চাষ করেন। সঙ্কটে পড়ে নবরূপ সমবায় সমিতি ও পূর্বাশা সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নেন তিনি। কিস্তির টাকা ঠিকমতই পরিশোধ করে আসছিললেন। কিন্তু কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে ঋণের কিস্তি আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আদায় না করার সরকারের নির্দেশনা পেয়ে তিনি কিস্তি পরিশোধ করেননি। কিন্তু গত ১ জুন থেকে সাধারণ ছুটি উঠিয়ে নেয়ার পর নবরূপ সমবায় সমিতি ও পূর্বাশা সমবায় সমিতির লোকজন ২ জুন তার ঘেরে হানা দেয়। ঘেরে মাড়াই করে রাখা ১২৫ বস্তা ধান (প্রায় দেড়শ মণ), শুকর ও ছাগল নিয়ে যায়। নবরূপ সমিতির লোকজন শুকর দুটির কেটে মাংস বিক্রি করে দিয়েছে। ছাগল ও ৪৫ বস্তা ধান পূর্বাশা সমিতির লোকেরা অন্য একজনের জিম্মায় রেখেছে বলে তারা জানিয়েছে।