করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত রবিবার (৩১ মে) থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার থেকে আট জোড়া ট্রেন ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যায়। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্টেশন থেকে ঢাকায়ও আসে। আর আগামীকাল বুধবার( ৩ জুন )থেকে আরও ১১ জোড়া ট্রেন চলাচল শুরু করবে বলে জানা যায় বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে।
তবে ১১ জোড়ার মধ্যে আন্তনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস আগামীকাল সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে চলবে না । বৃহঃবার (৪ জুন ) থেকে যথারীতি সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে বলে জানান কুড়িগ্রাম রেলওয়ের ষ্টেশন মাষ্টার মোঃ মোশারফ হোসেন ।
তিনি আরো জানান, সবধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছে কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পাশাপাশি সামাজিক দুরুত্বের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে বলে জানান তিনি। কুড়িগ্রাম জেলা থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য ২২৫ টি সিটের মধ্যে অর্ধেক সিট অনলাইনে দেয়া হয়েছে,অনলাইনে টিকিট কেটে সীমিত পরিসরে চলবে আন্তনগর এই ট্রেনটি। কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে আরো জানা যায়, ৪ জুন থেকে যাত্রার শুরু ১ঘন্টা পূর্বে অর্থ্যাৎ ৭টা ১৫ মি. এর ১ ঘন্টা পূর্বে রেল স্টেশনে মাস্ক,হ্যান্ড গ্লোভস পরিহিত হয়ে উপস্থিত হতে হবে যাত্রীদের। এই ১ ঘন্টা সময় ধরে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি নজরদারি করবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ।
এদিকে করোনা মোকাবিলায় রেলে যাত্রী পরিবহনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কারিগরি কমিটি কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-
১. স্টেশনগুলোতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম সংরক্ষণ।
২. জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন।
৩. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্র স্থাপন।
৪. প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
৫. রেলওয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৬. রেলকর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা।
৭. অসুস্থ অনুভবকারীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া।
৮. তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের সরঞ্জাম স্টেশনগুলোর প্রবেশপথে স্থাপন করা।
৯. স্টেশনে আগত সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করা।
১০. যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকবে তাদের ওই এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা।
১১. ট্রেনে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি।
১২. সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাত্রায় চালানো এবং বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা। সব এয়ার সিস্টেমের ফিরতি বাতাস বন্ধ রাখতে হবে।
১৩. জনসাধারণের ব্যবহারের স্থানগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
১৪. টয়লেটগুলোতে তরল সাবান থাকতে হবে। সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং জীবাণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে।
১৫. যাত্রীদের অপেক্ষা করার জন্য ট্রেন কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
১৬. প্রতিটি ট্রেন যাত্রা শুরুর আগে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সিট কভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
১৭. প্রতিটি ট্রেনে হাতে-ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে। যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন করতে হবে। যেখানে উপসর্গ আছে এমন যাত্রীদের অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাবে।
১৮. যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দিতে হবে।
১৯. সারিবদ্ধভাবে ওঠানামার সময়ে যাত্রীদের পরস্পর থেকে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।