২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

“সরকারি ডিউটি ফেলে বেসরকারি ক্লিনিকের ডাক্তার! রোগী টানতে বিলাচ্ছেন ভিজিটিং কার্ড”

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে সম্মুখ যোদ্ধা চিকিৎসকরা। চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন দেশের অনেক চিকিৎসক। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। অধিকাংশ সরকারি চিকিৎসকই নিয়ম মেনে হাসপাতালগুলোতে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

সরকারি হাসপাতালে নামে মাত্র খরচে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছেন সরকার। কিন্তু কিছু চিকিৎসক আছেন, যারা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে সরকারি ডিউটির সময় বেসরকারি হাসপাতালে ছুটে বেড়ান। এর সত্যতা পাওয়া গেল ২৫০শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে।

গত তিনদিন সরকারি ডিউটির সময় হাসপাতালের দুতলায় ২১২নং কক্ষে গিয়ে পাওয়া যায়নি নবজাতক ও শিশু রোগ চিকিৎসক আক্তার হোসাইনকে। দুপুর পৌনে একটার দিকে কক্ষে থাকা তার সহযোগী টিপু জানান যে, ডা. আক্তার হোসেইন শিশু ওয়ার্ড রাউন্ডে গেছেন এক ঘন্টা আগে। সহযোগীর দেওয়া তথ্য মতে হাসপাতালের ৩য় তলায় শিশু ওয়ার্ডে গিয়েও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওই ওয়ার্ডের নার্স ও রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসক আক্তার হোসেইন বেলা ১১টার দিকে ওয়ার্ড পরিদর্শন করে চলে গেছেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে বহিঃবিভাগের আরো দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও। হাসপাতালের বহিঃবিভাগের ১০৯/এ কক্ষের দুই অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক ডাঃ খান রিয়াজ মামহমুদ জিকো ও ডাঃ মোঃ সোলাইমানের বিরুদ্ধে রোগীদের রয়েছে একাধিক অভিযোগ। একজন দালালের মাধ্যমে রোগী প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠান। অন্যজন নিজের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেন৷ একজন দালালের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালের সামনে প্রাইভেট ক্লিনিকে ও অন্যজন কুমারশীল মোড় নিজের প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী পাঠিয়ে থাকেন। তা নিয়ে দুই চিকিৎসকের মধ্যে একাধিকবার কথা-কাটাকাটি হয়েছে।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে শিশু চিকিৎসক ডাঃ আক্তার হোসেইনকে সরকারি হাসপাতালে ডিউটি ফেলে হাসপাতালের সামনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঢুকতে দেখা যায়। এদিকে রোগীকে ভিজিটিং কার্ড দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে ব্যবস্থাপনা দিবে বলে ও পরিক্ষা-নিরিক্ষা জন্য দালাল দিয়ে রোগীকে ব্যক্তিগত ক্লিনিকে পাঠায়ে দিচ্ছে ডাঃ মোঃ সোলাইমান। ইতিমধ্যে প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাঃ খান রিয়াজ মাহমুদ জিকোর ভুল চিকিৎসার কারনে রোগীর ক্ষতি হয়েছে দাবি জানিয়ে ওই রোগীর অভিভাবক। ওই ব্যক্তি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

ডাঃ আখতার হোসেন আধা ঘন্টা পর ওই হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে তিনি কুমারশীল মোড়ে আরও একটি হাসপাতালে ঢুকে রোগী দেখা শুরু করেন। অথচ এই সময় সরকারি হাসপাতালে গিয়ে ২১২নং কক্ষের সামনে চিকিৎসকের জন্য সাধারণ রোগীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

একই চিত্র দেখা যায় মঙ্গলবার (৭জুন) দুপুরেও। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে চিকিৎসক আক্তার হোসেইন বলেন, আমি ওয়ার্ড রাউন্ড দিয়ে এই মাত্র বের হয়েছি। আছি হাসপাতালের আশেপাশেই আছি। আবার হাসপাতালে আসব, আমার একটা কাজ আছে। তিনি বলেন, (সোমবার, ৬ জুন) একটি সিরিয়াস রোগী ছিল তাই বের হয়েছিলাম। মাঠে আমি একাই আছি। অনেক চিকিৎসক নেই, সদরে ও বাইরে আমিই দেখছি রোগী। এটা অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তবে অফিস টাইমে বাইরে যাওয়া উচিৎ না।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক শওকত হোসেন জানান, আমরা সরকারি অফিস সময়ে চিকিৎসকদের হাসপাতালে বাইরে চিকিৎসা দিতে নিষেধ করেছি। যদি কেউ ডিউটি ফেলে বাইরে রোগী দেখেন, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরোও বলেন, ডাঃ খান রিয়াজ মাহমুদ জিকো ও ডাঃ মোঃ সোলাইমান এর ব্যাপারটি আমরা দেখবো।

(Visited ২৬ times, ১ visits today)

আরও পড়ুন

হযরত খাজাবাবা (রঃ) ও জামে আওলিয়া কেরামের পথ পূণরুদ্ধার সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল আলিম এর সহধর্মীনি নুরজাহান বেগম আর নেই
ফজলে রাব্বীর আসনে নৌকার হাল ধরতে চান যারা
মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবসে ফেনীতে র‍্যালী
এমপির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কিল-ঘুষির অভিযোগ
বঙ্গবন্ধুর সমাধীস্থলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের শ্রদ্ধাঞ্জলী
অসহায় মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করল ‘জীবন আলো’
নোয়াখালীতে প্রবাসীকে মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ