শেরপুরে সেই আলোচিত ভিক্ষুক পেলেন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বাড়ি। জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় প্রায় ৩ বছর ভিক্ষা করে জমানো ১০হাজার টাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) রুবেল মাহমুদ এর করোনা তহবিলে দান করা সেই নজিমদ্দিন ভিক্ষুককে তার মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে ঘর উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৬ আগষ্ট রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সেই পাকা ঘরে উঠেছেন তিনি। প্রধান মন্ত্রীর এই উপহার পেয়ে ভীষণ খুশি নাজিমুদ্দিন। আর তাকে নিয়ে এলাকাবাসীরও যেন উৎসাহের শেষ নেই। মাথা গোজার ঠাঁই হিসেবে একটি বাড়ী নাজিমুদ্দিনের আজ আর স্বপ্ন নয়। তার সে স্বপ্নকে সত্যি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ঘর মেরামত করার জন্য ভিক্ষা করে জমানো ১০ হাজার টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদের করোনা তহবিলে দান করেছিলেন তিনি নিঃস্বার্থভাবেই। এ খবর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর দেশে ও আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যাপক আলোচনায় উঠে আসে নাজিমুদ্দিন। তার এই দানে মুগ্ধ হয়ে তাৎক্ষনিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে একটি ঘর করে দেয়ার নির্দেশ দিলে ওই মাসেই ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন।
প্রায় সাড়ে চার মাসে নির্মাণ করা হয় নাজিমুদ্দিনের জন্য এই আধাপাকা ঘর। ১৬ আগষ্ট রোববার দুপুরে শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহাবুব আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘরটি হস্তান্তর করেন। সেই সাথে তিনি সরকারি সুবিধায় আজীবন চিকিৎসা সেবাও পাবেন।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন জানায়, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাইয়া আমি খুব খুশি। এহন আমার ইচ্ছা প্রধান মন্ত্রীর পা ছুঁইয়া তারে একটু সালাম করমু। তাই তার সাক্ষাত চাই। কারণ আমি ঘর পামু এই চিন্তা কইরা করোনা তহবিলে (তহবিল) ট্যাহা (টাকা) জমা দেই নাই। আমি দিছি, বেকার কর্মহীন মানুষ যাতে কিছু খাবার পায় এই জন্য। জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব জানায়, ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিনের মহানুভবতার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দুই লক্ষ টাকা দিয়েছিলে একটি ঘর নির্মান করে দেয়ার জন্য।
সে ঘরটির কাজ শেষ করে আজ আমরা ঘরের চাবি হস্তান্তর করলাম। এর পাশাপাশি আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে একটি দোকান ঘর করে দেয়া হয়েছে এবং তাকে সরকারী সুবিধায় আজীবন শারীরিক চিকিৎসা ফ্রি করে দেয়া হয়েছে।
বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ অসহায়দের সহায়তা তহবিল গঠন করলে ২১ এপ্রিল ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন নিজের ভাঙ্গাচোরা ঘরটি মেরামত করার জন্য প্রায় ২ মাস ভিক্ষা করে তিলেতিলে জমানো টাকা ওই তহবিলে জমা দেন। পরে সেই খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে এই ঘরটি নির্মান করে দেয়া হয়। পরিশেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোয়া করা হয়।