দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ফসলি জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে ক্যানেল খনন করেছে প্রশাসন। তবে স্থানীয়দের দাবি, অধিগ্রহণ না করে ও ক্ষতিপূরণ ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর ক্যানেলটি করা হয়। কোনো নোটিশ না দিয়ে আধাপাকা ধান ও সবজি ক্ষেত নষ্ট করে এটি করা হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া এলাকায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাহমুদুল আলম ক্যানেল নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন। এ সময় ক্যানেল নির্মাণে বাধা দেন ৬৪জন জমির মালিক। তারা সেখানে ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন করেন। এসময় প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে জমির মালিকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, তিন বছর আগে পাশের চন্ডীপুরে সরকারি জমির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ক্যানেল দিয়ে ওই সব জমির পানি নিষ্কাশিত হচ্ছিল। কিন্তু প্রভাবশালী কয়েকজন ক্যানেলের মুখ বন্ধ করে খাস জমি দখলে নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। এতে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়।
৩ বছর ধরে ওই এলাকার অর্ধশত কৃষক জমিগুলো থেকে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তারা জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ক্যানেল খনন কার্যক্রম শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু ক্যানেলটি খননের শরু করতেই আপত্তি জানান জমির মালিকরা। এরপরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্যানেল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
বারাইপাড়া গ্রামের ফজর আলী বলেন, ‘আমার জমি নাই, ভ্যান চালিয়ে খাই। আর মাত্র ২০ দিন পরেই এই ধান উঠতো। এখন আমার ফসল নষ্ট হলো। আমি ক্ষতিপূরণ চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষতিপূরণ চাওয়াতে আমাকে মারধর করা হয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনেই।’
সানোয়ারা বেওয়া বলেন, ‘আমার শুধু জমিটুকুই আছে। আগে যেদিক দিয়ে ক্যানেল ছিল সেদিক দিয়ে না করে আবাদি জমির উপর দিয়ে খনন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর ক্ষতিপূরণ চাই আমরা।
এদিকে জলাবদ্ধ জমির একজন মালিক জালাল উদ্দিন বলেন, ক্যানেল হওয়াতে এখন এই জমিতে ফসল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো।
ক্ষতিপূরণের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না আর কোন প্রকল্পের অধীনে এটি খনন করা হয় তা জানাতে পারেননি ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল হক সুমন।
দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদ্য বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান বলেন, জমির মালিকরা আপত্তি জানানোয় এক বছর আগে খনন কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর ওখানে কেউ কোনো খনন করার কথা না।
দিনাজপুরের ডিসি জানান, কয়েক হাজার একর জমিতে ফসল ফলানোর জন্য ৪০০ মিটার ক্যানেল নির্মাণ করা হয়। কৃষকেরা জমি ও ফসলের ক্ষতিপূরণ পাবেন বলেও ডিসি আশ্বস্ত করেন।