২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

সৌদি ভিসা বাতিল হয়নি, করতে হবে নবায়ন

সৌদি ভিসা বা আকামা নিয়ে প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে
চলছে এক ধরনের ধোঁয়াশা। তাদের অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন সৌদি আরব যেতে পারবেন কি না। নানা মাধ্যমে প্রচার হয়েছে যে ভিসা বাতিল হয়ে গেছে। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, কোনো ভিসাই বাতিল হয়নি।

এবিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা কখনো সৌদি আরবে আগে চাকরি করতে যায়নি, এমন ২৫ হাজার নতুন ভিসা ইস্যু হয়েছিল। তাদের ২৩ মার্চের মধ্যে সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তারা যেতে পারেনি। তবে এখন তারা যেতে পারবেন। এ জন্য তাদের ভিসা রিনিউ (নবায়ন) করতে হবে।’

ভিসা বাতিল হওয়ার প্রচার সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কথা হচ্ছে, করোনার কারণে তারা যেতে না পারায় ভিসা অটোমেটিক রিনিউ হবে না। তাদের এটা রিনিউ করে সেখানে যেতে হবে। যারা নতুন চাকরি নিয়েছে, তারা প্রত্যেকে যেতে পারবে।’

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবে ২০ লাখের বেশি বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কাজ করেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশটি থেকে গত ছয় মাসে ৩৯ হাজার ১৮৮ জন কর্মী ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৭৭৬ জন নারী কর্মী রয়েছেন।

তবে দেশটির সঙ্গে সম্প্রতি ফ্লাইট চালুর পর প্রায় ছয় হাজার প্রবাসী সেখানে কাজে যোগ দিতে গেছেন বলে সরকারের ভাষ্য।

সৌদি থেকে দেশে বেড়াতে আসা প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে যাদের আকামা ও ভিসা রয়েছে, তারা সেখানে নিশ্চিন্তে যাচ্ছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কফিল ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় ৫৩ কর্মীর সৌদি যাওয়ার সমস্যা কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন মানব বার্তকে বলেন, ‘যারা ওখানে চাকরি করতেন কিন্তু নতুন করে ওয়ার্ক পারমিট না বাড়ানোয় ৫৩ জনকে তাদের কফিল সেখানে যেতে অনুমতি দেননি। তাদের কফিলের কাছ থেকে চাকরির মেয়াদ বাড়াতে হবে, অনুমতি নিতে হবে। সেটা করতে না পারলে তাদের নতুন চাকরি নিতে হবে।’

ছয় মাসে কর্মী ফেরত ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৮
করোনা মহামারির কারণে গত ছয় মাসে ২৯টি দেশ থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৪ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৪৯ হাজার ১৮ জন পুরুষ এবং ১৬ হাজার ৬৪০ জন নারী কর্মী। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পযন্ত বাংলাদেশি শ্রমিকের দেশে ফেরার এই পরিসংখ্যান জানায়।

তবে চলতি বছরের শুরুর দিকটা হিসেবে করলে এই সংখ্যা পৌনে ৩ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান।

এদিকে গত ছয় মাসে সবচেয়ে বেশি কর্মী ফিরেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। সেখানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ না থাকার কথা বলে ৪৪ হাজার ৬১৬ জন বাংলাদেশিকে ছুটিতে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে নারী ৩ হাজার ১৫৬ জন।
আমিরাতের পর সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক ফেরত পাঠায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। সেখানে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস এবং অনেকে কাজ হারিয়ে দেশে এসেছেন। ফিরে আসা ৩৯ হাজার ১৮৮ জন কর্মীর মধ্যে ৫ হাজার ৭৭৬ জন নারী শ্রমিক।

কাজ না থাকায় কাতার থেকে ১৪ হাজার ৯১১ জন শ্রমিককে দেশে ফেরত আসতে হয়। এদের মধ্যে পুরষ ১৩ হাজার ৬৭০ জন এবং নারী ১ হাজার ২৪১ জন।

আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত রাষ্ট্র ওমান থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১০ হাজার ৭১৩ জনকে। তাদের মধ্যে নারী ১ হাজার ১৯১ জন।

মালদ্বীপে কর্মহীন হয়ে পড়েন বিদেশি কর্মীদের অনেকেই। সেখান থেকে ১০ হাজার ৪৮৩ জন বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৪১০ জন এবং নারী ৭৩ জন।

অন্যদিকে কুয়েত থেকে ২১৬ জন নারী শ্রমিকসহ ফিরে এসেছেন ৯ হাজার ৯৯৭ জন। ইরাক থেকে ফেরত আসা ৮ হাজার ৩২ জনের মধ্যে ৬০ জন নারী।

কাজ না থাকায় মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে হয়েছে ৭ হাজার ৫৬৮ জন শ্রমিককে। যাদের মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ২১৬ জন এবং নারী ৩৫২ জন। তুরস্ক থেকে ৫০৬ জন নারী কর্মীসহ ফিরে এসেছেন ৬ হাজার ১৪২ জন। লেবানন থেকে ৫ হাজার ৮০১ জন, নারী ১ হাজার ৮৮৭ জন।

কাজের চুক্তি শেষ হওয়ার পর মেয়াদ না বাড়িয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে ২ হাজার ৭৯৪ জনকে। যাদের মধ্যে ২ হাজার ৭৬৫ পুরুষ এবং ২৯ জন নারী শ্রমিক।

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় জর্ডান থেকে ২ হাজার ১৯৭ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন এবং নারী ১ হাজার ৭৮৯ জন।
বাহরাইন থেকে দেশে ফিরেছেন ৯২১ জন। এসব শ্রমিকরা দেশটি থেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাশ নিয়ে দেশে আসেন।

কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা থেকে ৫৪৮ জন, মরিশাস থেকে ৪৫২ জন, লিবিয়া থেকে ৩১৫ জন এবং ভিয়েতনাম থেকে ১২১ জন ফেরত এসেছে।

কাজ না থাকায় কম্বোডিয়া থেকে ১০৬ জন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১০০ জন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৭১ জন, মিয়ানমার থেকে ৩৯ জন এবং থাইল্যান্ড থেকে ৩২ জন দেশে ফিরে আসেন।
রাশিয়া থেকে ফিরেছেন ১০০ জন, নেপাল থেকে ৫৫ জন, যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন ৫৩ জন, হংকং থেকে ১৬ জন।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের দেশে ফেরত আসাদের মধ্যে গত ৬ জুলাই ইতালি থেকে করোনা সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো ১৫১ জনও তালিকায় রয়েছে।

এছাড়া আইএম জাপান চুক্তির মাধ্যমে তিন বছরের মেয়াদ শেষে জাপান থেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন আটজন কর্মী। এবং অন্যান্য দেশ থেকে ফেরত এসেছে ১২৮ জন।

(Visited ১১ times, ১ visits today)

আরও পড়ুন

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
চাল আমদানির সুযোগ পাচ্ছে ১২৫ প্রতিষ্ঠান
ঈদে বাড়ি যেতে মানতে হবে ১২ নির্দেশনা
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, না মানলে শাস্তি
বাড়ছে করোনা আসছে কঠোর নির্দেশনা!
মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর সাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু সাঁতরে মঞ্চে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলল কিশোরী
মাদারীপুর শিবচরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী