আজ ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার রংপুর সুগার মিলের জমিতে বসতি স্থাাপনকারি সাঁওতাল হত্যা ও উচ্ছেদের চার বছর পূর্ণ হয়েছে। এই দিনে তাদের বসতভিটায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৪ বছর পার হলেও এখনও শেষ হয়নি বিচার কাজ। সাঁওতাল নেতাদের দাবী, তাদের দ্রুত পূর্নবাসনসহ জমি ফেরত দিতে হবে এবং দ্রুত বিচার কাজ শেষ না হলে কঠোর আন্দোলন করবে তারা।
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রংপুর সুগার মিলের বিরোধপূর্ন সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমিতে বসতি স্থাপনকারি সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে সুগার মিল কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদের সময় সাঁওতালদের সাথে সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও সুগার মিল কর্তৃপক্ষের। এ সময় সাঁওতালদের ঘড়-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া ছাড়াও হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সেদিন শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ নামে তিন সাঁওতাল নিহত হয়।
হামলার শিকার অনেকে বেঁচে আছেন শরীরে ক্ষত চিহ্ন নিয়ে। উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতাল পরিবারগুলো আজও সেই ছোট টিনের ছাপড়া আর ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। সুষ্ঠু বিচার ও জমি ফেরতের আশায় নানা কষ্টে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ সাঁওতালদের।
ঘটনার পর ১৬ নভেম্বর সাঁওতালদের পক্ষ থেকে থমাস হেব্রম বাদী হয়ে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই ঘটনার দুই বছর পর গত বছরের ২৮ জুলাই পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেষ্টিগেশন গাইবান্ধার সহকারি পুলিশ সুপার আব্দুর হাই সরকার আদালতে মামলার চার্জশীট দাখিল করেন। কিন্তু সাঁওতালদের অভিযোগ মুল আসামীদের নাম বাদ দিয়ে মনগড়া চার্জশীট দিয়েছে পিবিআই। পরবর্তীতে ৪ সেপ্টেম্বর ওই চার্জশীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দাখিল করলে আদালত তদন্ত ভার সিআইডিকে প্রদান করেন। এদিকে হামলার ৪ বছরেও জমি ফেরত না পেয়ে ও মামলায় মুল আসামীদের বাদ দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হন সাঁওতালরা। উচ্ছেদের পর থেকে সাঁওতাল আদিবাসীরা সরে আসেনি তাদের জমি ফিরিয়ে নেওয়ার দাবী থেকে।
এদিকে দ্রুত তাদের জমি ফেরতসহ পূর্নবাসন ও মামলার সঠিক বিচারসহ ৭ দফা দাবি পুরন না হলে দেশের সব আদিবাসিদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনে নামবেন বলে জাগরণকে জানান, সাহেবগঞ্জ ভূমি উদ্ধার কমিটি সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।
তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধায় সাঁওতাল বসতিতে হামলা ও হত্যার ৪ বছর পুর্তিতে বিক্ষোভ সমাবেশ সহ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করছে আদিবাসি সাঁওতালরা।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ওসি এমকেএম মেহেদী হাসান জাগরণকে বলেন, চার বছর পুর্তিতে বিক্ষোভ সমাবেশ সহ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করছে আদিবাসি সাঁওতালরা। করোনার কারণে তাদের ঢাকা থেকে কোন প্রতিনিধি না আসলেও বিভাগীয় পর্যায়ের দুজন প্রতিনিধি এই সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। বিকেল ৫ টার মধ্যে এই কর্মসূচি শেষ হবে বলে তিনি জানান।