আসামে সব মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বিল পাশ করেছে বিজেপি সরকার। মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভারতে ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নানাভাবে নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে আগে থেকেই। এবার আসামের সব সরকারি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সেই আলোচনা আরও উসকে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির দলটি।
বুধবার আসামের বিধানসভায় রাজ্যের সাত শতাধিক সরকারি মাদ্রাসা বন্ধে একটি বিল পাস হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায় এবং বিরোধী দলগুলো আপত্তি তুললেও তাতে কর্ণপাত না করে বিলটি কণ্ঠভোটে পাঠান স্পিকার হিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী। এতে সমর্থন দেন সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি সদস্যরা।
রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী এবং বিজেপির উদীয়মান নেতা হিমান্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় থেকে মসজিদের ইমামের চেয়ে আমাদের চিকিৎসক, পুলিশ, কূটনীতিক ও শিক্ষক বেশি প্রয়োজন।
তিনি বলেছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা পৃথিবী ও পার্থিব উদ্বেগ মোকাবিলায় কাউকে প্রস্তুত করতে পারছে না। একারণে আসামের সব সরকারি মাদ্রাসাগুলোকে সাধারণ স্কুলে পরিণত করা হবে।
বিরোধী নেতারা এ সিদ্ধান্তকে মুসলিমদের ওপর অযাচিত আক্রমণ বলে মন্তব্য করেছেন। কংগ্রেস পার্টির সংসদ সদস্য ওয়াজেদ আলী চৌধুরির মতে, এটি মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করে ফেলার একটি পরিকল্পনা মাত্র।
তবে আসামের শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, তারা রাজ্যটির শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নিয়েছেন। এ প্রক্রিয়ায় আসামের প্রায় ১০০টি সরকারি সংস্কৃত টোলকেও (সংস্কৃত শিক্ষাকেন্দ্র) আধুনিক স্কুলে পরিণত করা হবে।
আর রাজ্যের বেসরকারি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ বা সংস্কারে আপাতত সরকারের কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আসামে ১৯১৫ সালে শুরু হয়েছিল মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রম। সরকারি মাদ্রাসা ও টোলগুলোর পেছনে রাজ্যটির সরকার প্রতিবছর ২৬০ কোটি রুপি খরচ করত। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আসামের বিজেপিশাসিত সরকার ঘোষণা দেয়, ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে সরকারি তহবিল দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষা চলবে না।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস