২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

বনানীতে শায়িত হলেন ক্যাপ্টেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক

মোরশেদ আলম: রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে শায়িত হলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা গ্রুপ ক্যাপ্টেন নাজমুল হক। আজ রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

দুপুর ২ টার দিকে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ বনানী সামরিক কবরস্থানে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এছাড়া নিকটাত্মীয় ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এসময় তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

ক্যাপ্টেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ ওয়াই এম নাজমুল হক করোনায় আক্রান্ত হলে চলতি মাসে তাকে শ্যামলী সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার(২৩ জানুয়ারী) রাত ৯ঃ৩০টার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ক্যাপ্টেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ ওয়াই এম নাজমুল হক ছিলেন ইসলামী গবেষনায় একমাত্র একুশে পদক প্রাপ্ত, ওস্তাজুল ওলামা, শায়খুল হাদিস, ইমামে আহলে সুন্নাত, পীরে হাক্কানি, ওলীয়ে রাব্বানি, বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা সৈয়দ সাইফুর রহমান নিজামী শাহ এর বড় কন্যার জামাতা। তাঁর জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন হজরত সৈয়দ নিজামী শাহ এর বড় সাহেবজাদা বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রবর্তক সৈয়দ আল্লামা ইমাম হায়াত।
মহাবরকতময় সালাতু সালাম ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দাফন কাজ সম্পন্ন হয়।

এক নজরে এ ওয়াই এম নাজমুল হকের জীবনীঃ
গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ ওয়াই এম নাজমুল হক, পিএসসি (বিডি/৭০৬৪), জিডি(পি) ০১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সালে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানাধীন চাতারপাইয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ মুজিবুল হক এবং মাতার নাম নুরজাহান হক।

কর্মকর্তা ১৯৬৮ সালে মিরসরাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

কর্মকর্তা ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন এবং ৭ই আগস্ট ১৯৭৭ তারিখে জিডি(পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। চাকরিকালীন তিনি বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে স্কোয়াড্রন পাইলট ও ফ্লাইট কমান্ডার অপারেশন্স ১ নং বহর, ফ্লাইট সেফটি অফিসার বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার, সহকারী পরিচালক উড্ডয়ন ও নিরাপত্তা পরিদপ্তর, উপপরিচালক প্রভোস্ট মার্শাল পরিদপ্তর, পরিকল্পনা পরিদপ্তর, পরিচালক পরিকল্পনা পরদপ্তর, অধিনায়ক ৩১ নং বহর এবং অপারেশন উইং বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক।

চাকরীকালীন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন। তিনি বিমান বাহিনী থেকে অফিসার্স স্পেশাল এডমিন কোর্স, জুনিয়র কমান্ড এন্ড স্টাফ কোর্স, ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর কোর্স, ফিজিক্যাল ফিটনেস কোর্স, জেনারেল সারভাইবেল কোর্স, ওয়াটার ম্যানশিপ কোর্স, ডিএসসিএসসি মিরপুর থেকে এয়ার স্টাফ কোর্স, রাশিয়া থেকে ফ্লাইং ট্রেনিং কোর্স, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জেট ইঞ্জিন এক্সডেন্টাল কোর্স এবং জার্মান থেকে জেনারেল স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন।

চাকরীকালীন তিনি এল-২৯, এমআই-৪, এমআই-৮ এবং বেল-২১২ এয়ারক্রাফট উড্ডয়ন করেন।

মরহুম কর্মকর্তা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর এই অবদান জাতির কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ০৫ মাস ২৫ দিন কমিশন চাকরি সমাপনান্তে ২৬ জানুয়ারি ২০০৪ তারিখে গ্রুপ ক্যাপ্টেন বয়সসীমা অতিক্রান্তে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রায় ১৭ বছর অবসর ভোগের পর গত ২৩শে জানুয়ারি ২০২১ তারিখে আনুমানিক ৯টা ৪৫ ঘটিকায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর ১১ মাস ২৪ দিন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ০২ ছেলে, ০১ কন্যা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বিমান বাহিনীতে তিনি অত্যন্ত সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করেছেন। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

মোরশেদ/মানব বার্তা

(Visited ১৪৯ times, ১ visits today)

আরও পড়ুন

মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবসে ফেনীতে র‍্যালী
মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্টের সমাবেশ
মহররম ঈমানী শোক ও ঈমানী শপথের মাস, আনন্দ উদযাপনের নয় – আল্লামা ইমাম হায়াত
করোনায় সারাদেশে আরও ৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৯৯৮
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পেপসির সঙ্গে বিষ খাইয়ে খুন, যুবকের যাবজ্জীবন
চাল আমদানির সুযোগ পাচ্ছে ১২৫ প্রতিষ্ঠান
প্রধানমন্ত্রী সন্তানদের সাথে পদ্মা সেতুর সৌন্দর্য উপভোগ