প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন ছাত্রলীগ নেতা রেদোয়ান হুদা আজাদ। কিন্তু তার সাথে প্রেমের পূর্বে আরো একজনের সাথে প্রেম ছিল নববধূর। আনুষ্ঠানিকভাবে বউ তুলে আনতে গিয়ে সাবেক প্রেমিকের হামলায় বর, বরের মা, মামা ও চাচা আহত হয়েছেন। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) ময়মনসিংহ সদরের ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা সড়কের মোদারপুর এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় জড়িত দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, ময়মনসিংহ নগরীর কেওয়াটখালী এলাকার বাসিন্দা রেদোয়ান হুদা আজাদ। তিনি ওই এলাকার শিক্ষক নূরুল হুদা আজাদের ছেলে ও আনন্দমোহন সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। রেদোয়ান হুদা আজাদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তারাকান্দা উপজেলার দয়ারামপুর গ্রামের সুরাইয়া ইয়াসমিন রত্নার। তিনি আনন্দমোহন কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী। প্রেমের সম্পর্কের জেরে গত শনিবার রেদোয়ানের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয় বিয়ের দাবিতে। পরে স্থানীয় ও পারবারিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। কিন্তু মেয়ের পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়েকে হস্তান্তরের জন্য গত সোমবার মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যায়।
এর মধ্যে বর ছাত্রলীগ নেতা রেদোয়ান হুদা আজাদকে মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে ফোন করেন মিনহাজ আকন্দ নামে এক যুবক। সেও ছাত্রলীগ কর্মী। রত্নাকে নিজের প্রেমিকা দাবি করে বিয়ে না করতে হুমকি দেওয়া হয়। মিনহাজের বাড়ি সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জের মোদারপুর এলাকায়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিটমাটও হয়। যেহেতু বিয়ে হয়ে গেছে সে কারণে বাধা হয়ে না দাঁড়াতে অনুরোধ করা হয় মিনহাজকে।
বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে কনে আনতে বরযাত্রীবাহী গাড়ি সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জ-নেত্রকোনা সড়কের মোদারপুর এলাকায় যেতেই এদিন দুপুরে বরযাত্রী গাড়ির গতিরোধ করা হয়। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়ি আটকে ৮/১০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। ওই সময় গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় কনের জন্য নেওয়া গহনাসহ অন্যান্য মালামাল। ওই সময় আহত হন বর রেদোয়ান হুদা আজাদ, তার মা মাহমুদা বেগম ও মামা আজি জাহান। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
বর রেদোয়ান হুদা আজাদ বলেন, বিয়ের পর আনুষ্ঠানিকভাবে স্ত্রীকে আনতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের রাস্তায় আটকে হামলা করে জখম করা হয়েছে। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি লুট করে নিয়ে গেছে। হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন তিনি।
কনের চাচা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মিনহাজ কলেজে যাওয়া আসার পথে উত্ত্যক্ত করতো তার ভাতিজিকে। কিন্তু গত এক বছর ধরে তা বন্ধ ছিল। বরযাত্রীর গাড়িতে হামলাকারী মিনহাজের বিচার চান তিনি।
কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক আহমেদ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি পুলিশের একটি দল এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই যুবককে আটক করেছে। অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।